ভারতীয় উপমহাদেশীয় মহিলাদের মধ্যে জরায়ু ক্যান্সার অন্যতম প্রবল। WHO-এর তথ্য অনুযায়ী, এটি বিশ্বব্যাপী মহিলাদের মধ্যে ক্যান্সারের চতুর্থ সাধারণ কারণ। এই ধরণের ক্যান্সারে, জরায়ুমুখে, গর্ভাশয়ে বা জরায়ুর নিচের অংশে কোষের অস্বাভাবিক বৃদ্ধি ঘটে। এই ক্যান্সার ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে, তাই প্রাথমিক পর্যায়ে ধরা পড়লে নিরাময় সম্ভব। প্রাথমিক পর্যায়ে চিকিৎসা না করলে ক্যান্সার শরীরের বিভিন্ন অংশে ছড়িয়ে পড়তে পারে। সারভাইকাল ক্যান্সারেরও নির্দিষ্ট কিছু কারণ রয়েছে যা ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়াতে পারে। প্রাথমিক পর্যায়ে ক্যান্সার প্রতিরোধ বা চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার আগে সেই কারণগুলি জানা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
জরায়ু ক্যান্সার কি
জরায়ু ক্যান্সার হলো
জরায়ুর আস্তরণে অস্বাভাবিক কোষের অনিয়ন্ত্রিত বৃদ্ধির ফলে উত্তপ্ত একটি রোগ। জরায়ু মহিলার প্রজনন প্রণালীর অংশ এবং এটি গর্ভের নীচের অংশে অবস্থিত, যা গর্ভ থেকে
যোনি পর্যন্ত খোলা। এই রোগের অন্যতম
নাম হল "জরায়ু মুখের ক্যান্সার"। সারভাইকাল ক্যান্সার
সমস্ত ক্যান্সারের মধ্যে চতুর্থ স্থানে রয়েছে এবং বর্তমানে এই রোগে প্রতি
২ মিনিটে একজনের মৃত্যু হয়। গুরুত্বপূর্ণভাবে, এটি ৪২ টি দেশে
মহিলাদের মধ্যে ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর প্রধান কারণ হিসাবে প্রকাশ পায়।
জরায়ু ক্যানসারের
প্রধান
রিস্ক
ফ্যাক্টরগুলো নিম্নলিখিত হতে পারে
1. হিউম্যান পাপিলোমা ভাইরাস (HPV) সংক্রমণ:
হিউম্যান পাপিলোমা ভাইরাস জরায়ু ক্যানসারের প্রধান কারণ হিসাবে বিশেষভাবে পরিচিত। বিভিন্ন ধরনের HPV সংক্রমণ জরায়ু স্বাস্থ্যের ঝুঁকি বাড়ায় এবং ক্যানসারের উত্থানে উপযুক্ত পরিবেশ সৃষ্টি করে।
2. ক্লামাইডিয়া ভাইরাসে ইনফেকশন:
ক্লামাইডিয়া একটি অতি ছোট ব্যাকটেরিয়াল পথোজেন যা সেক্সুয়ালি সংক্রমণের মাধ্যমে একজন ব্যক্তির জরায়ুতে ইনফেকশন সৃষ্টি করতে পারে। এটি ধরা পড়ে যেখানে স্ত্রীর জরায়ুতে আক্রমণকারী হতে পারে এবং পুরুষের যৌন অংগে আক্রমণকারী হতে পারে। কিছু সাধারণ লক্ষণ হতে পারে, যেমন:
Ø
জরায়ুতে
দুর্বলতা বা ব্যার্থ ব্যাথা
Ø
যৌন
প্রসবসহ ব্যথা
Ø
স্ত্রীলোকের
জরায়ুতে সাদা বা অস্বচ্ছ ডিসচার্জ
3. ধূমপান: ধূমপানের ক্রমটি জরায়ু ক্যানসারের ঝুঁকির বৃদ্ধির মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ কারক হিসাবে বিবেচিত হতে পারে।
4. অশুদ্ধ খাবার: অশুদ্ধ খাবার সেবনের ফলে সার্ভাইকাল এবং অন্যান্য জরায়ু সংক্রমণের ঝুঁকি বৃদ্ধি হয়ে থাকে।
5. অবৈধ যৌন আচরণ: অবৈধ যৌন আচরণের ফলে জরায়ু সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ে এবং জরায়ু ক্যানসার বাড়াতে পারে।
6. কম গর্ভনিরোধক ব্যবহার:
নিয়মিত গর্ভনিরোধক ব্যবহার না করা জরায়ু ক্যানসারের ঝুঁকিকে বাড়াতে পারে।
7. অধিক জনসংখ্যে মহিলা শিশুদের জন্য পরিপূর্ণ যৌন স্বাস্থ্য সেবা না পাওয়া:
অনেক দেশে মহিলা শিশুদের জন্য উপলব্ধ স্বাস্থ্য সেবা না পাওয়া জরায়ু ক্যানসারের ঝুঁকিকে বাড়াতে পারে।8. অল্প বয়সে বিয়ে করা
9. অল্প বয়সে বাচ্চা নেয়া
10.কোন ব্যক্তির পূর্বের স্ত্রীর এই রোগ হয়ে থাকলে, তার সাথে যৌন মিলন করা
11.একাধিক ব্যক্তির সাথে যৌন মিলন করা
12. ঘন ঘন বা
অধিক বাচ্চা নেয়া
জরায়ু ক্যান্সার
হওয়ার
লক্ষণসমুহ
ও
প্রাথমিক
সংকেত
প্রাথমিক পর্যায়ে জরায়ূ ক্যান্সারের কোনও বিশেষ উপসর্গ হয় না। কিন্তু যখন ক্যান্সার জরায়ুর গভীরে টিস্যুতে বা শরীরের অন্যান্য অংশে ছড়িয়ে পড়ে, তখন নিম্নলিখিত লক্ষণগুলি দেখা যেতে পারে:
1. সাধারণত স্ত্রীদের ক্ষেত্রে পিরিয়ডের পরিমাণ বা সময় বেশি হয়ে যাওয়া।
2. সহবাসের সময়ে ব্যথা অনুভব হতে পারে।
3. যোনিপথে অস্বাভাবিক দুর্গন্ধ বা নিঃসরণ অনুভব করা যেতে পারে।
4. পিরিয়ডের সময় বা পর্যাপ্তির সময় রক্তপাত ঘটতে পারে।
5. সহবাসের সময় অস্বস্তি বা রক্তপাত ঘটতে পারে।
6. তীব্র গন্ধযুক্ত যোনি স্রাব হতে পারে।
7. রক্তের সাথে যোনি স্রাব হতে পারে।
8. প্রস্রাব করার সময় ব্যথা অনুভব হতে পারে।
9. ওজন কমে যাওয়া, ক্ষুধা মন্দা, শরীরে অবসন্নতা অনুভব হতে পারে।
10. প্রস্রাবে জ্বালা পোড়া, ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়া এবং রক্তের সাথে যুক্ত প্রস্রাব ঘটতে পারে।
11. রক্ত শূন্যতা অনুভব করা যেতে পারে।
12. পিঠে, তলপেটে বা পায়ে ব্যথা
অনুভব হতে পারে, এবং পা ফুলে যেতে
পারে।
জরায়ু ক্যানসার
সনাক্ত
করার
প্রক্রিয়া
বা
পরীক্ষা
এই পরীক্ষা বিভিন্ন ধরনের টেষ্ট বা পরীক্ষার মাধ্যমে ক্যানসারের উপস্থিতি নিশ্চিত করে। এই টেষ্ট করা হয় যাতে যদি কোনো সন্দেহ থাকে তবে সেটিকে বিশ্বাসী করা যায় বা ক্যানসারের উপস্থিতি নিশ্চিত করার জন্য। জরায়ু ক্যানসার সনাক্তকরণের জন্য বিভিন্ন ধরনের টেষ্ট ব্যবহার করা হয়, যেমন:
1. পাপ স্মিয়ার টেস্ট:
এটি জরায়ু থেকে স্যাম্পল নেয়া হয় এবং জরায়ু কোষের উপস্থিতিতে অস্বাভাবিকতা বা ক্যানসারের লক্ষণ নির্ধারণ করা হয়।
2. জরায়ু স্ক্রিনিং টেস্ট: এটি জরায়ুতে এই ক্যানসারের পূর্ববর্তী অবস্থান সনাক্ত করে এবং সংক্ষেপে পাঁচ বা আরও তল্লাশী পরীক্ষা করার জন্য নির্দেশনা দেয়।
3. এমআর আই (MRI): এটি একটি প্রস্তুতিক পরীক্ষা যা জরায়ুর অবস্থান সম্পর্কে বিস্তারিত ছবি তৈরি করে এবং যেখানে সংক্রান্ত অস্বাভাবিক কোষ বা অংশ সনাক্ত করা যায়।
4. বিপিএসএ (Biopsy): এটি অস্বাভাবিক অংশ থেকে টিস্যু নমুনা নেওয়ার পদ্ধতি, যাতে অবশ্যই ক্যানসারের উপস্থিতি বা বিস্তার নিশ্চিত করা যায়।
5. ল্যাব
পরীক্ষা:
a. কমপ্লিট ব্লাড কাউন্ট (CBC): একটি রক্ত পরীক্ষা যা রক্তের নমুনায় নিম্নলিখিতগুলি পরিমাপ করে:
Ø লোহিত রক্ত কণিকা, শ্বেত রক্তকণিকা এবং প্লেটলেটের সংখ্যা
Ø লোহিত রক্ত কণিকায় হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ (অক্সিজেন বহন করে এমন প্রোটিন)
Ø রক্তের নমুনার অংশ লোহিত রক্তকণিকা দ্বারা গঠিত
b. ব্লাড কেমিষ্ট্রি পরীক্ষা : রক্তের রসায়ন অধ্যয়ন হল একটি রক্ত পরীক্ষা যা শরীরের অঙ্গ ও টিস্যু দ্বারা রক্তে নির্গত কিছু পদার্থের পরিমাণ পরিমাপ করে, যার মধ্যে রয়েছে:
Ø ল্যাকটেট ডিহাইড্রোজেনেস(LDH)
Ø ইউরিক অ্যাসিড(UA)
Ø ব্লাড ইউরিয়া নাইট্রোজেন(BUN)
(স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি বা কম) পরিমাণে পদার্থ ক্যান্সারের বিস্তার বা অন্যান্য রোগের লক্ষণ হতে পারে।
c. ক্যান্সার বায়োমার্কার পরীক্ষা: CA125 (cancer antigen125) test
জরায়ু ক্যানসারের প্রতিরোধে কার্যকরী উপায় সমুহ
বাংলাদেশে প্রতি বছর প্রায় ১২ হাজার নতুন জরায়ু ক্যানসার রোগী শনাক্ত হয় এবং এদের মধ্যে প্রায় ৬ হাজার মানুষ মৃত্যু পান। অর্থাৎ নতুন রোগীর প্রায় অর্ধেক মৃত্যুর শিকার হয়। তবে, সঠিক চিকিৎসা পেলে জরায়ু ক্যানসার সম্পূর্ণ ভালো হয়ে যায় এবং এটি একমাত্র এমন ক্যানসার যেখানে টিকা আবিষ্কৃত হয়েছে। তাই জরায়ু ক্যানসারের প্রতিরোধে সচেতন হতে এবং সঠিক পরামর্শ ও চিকিৎসা অনুসরণ করা প্রয়োজন।
কিছু খাবারের
ধরন
যেখানে
যা
জরায়ু
ক্যানসারের
প্রতিরোধে
সহায়ক:
1. ফ্ল্যাভোনয়েডস:
ফল এবং সবজির রাসায়নিক যৌগ যা ক্যানসারের বিরুদ্ধে সুরক্ষা করে এবং এটি জরায়ু ক্যানসারের প্রতিরোধে সহায়ক। কলা, ব্রকলি, টমেটো, রসুন, পেঁয়াজ, লেটুস, মটরশুটি ইত্যাদি ফ্ল্যাভোনয়েড সমৃদ্ধ খাবারের উদাহরণ।
2. ক্যারোটিনয়েডস:
কিছু গবেষণা প্রমাণিত করেছে যে ভিটামিন এ-এর উৎস ক্যারোটিনয়েড
জরায়ুমুখের ক্যান্সারের ঝুঁকি প্রতিরোধে সহায়ক। উপরের তালিকাতে ফল, শাকসবজি এবং মটরশুটির অলাভ ছাড়াও, আপনি আপনার ডায়েটে কমলা, গাজর, মিষ্টি আলু, কুমড়া এবং শীতকালীন সতেজ সবজি অন্তর্ভুক্ত করতে পারেন
3.ফোলিক এসিড: ফোলিক এসিড ক্যানসারের ঝুঁকি কমায়। গবেষণা বলে দেখায় ফোলিক
এসিড সমৃদ্ধ খাবার যেমন আখরোট, মসুর ডাল, ছোলা, অ্যাভোকাডোস, সিরিয়াল ইত্যাদি এই ধরনের
খাবারে রয়েছে।
কিছু কিছু খাবার আছে যেগুলো জরায়ু ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়িয়ে তোলে, অন্য দিকে বেশ কিছু খাবার আছে যা ক্যানসারের বিরুদ্ধে জোরদার প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে পারে।এমন কিছু ফল ও সবজি সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক-
1.কলা: বছরের প্রতিটি সময় কলা পাওয়া যায়। যদি কোন শারীরিক সমস্যা না থাকে তাহলে প্রতিদিন কলা খাওয়া উত্তম। কলা সেলেনিয়ামের এক শক্তিশালী উৎস এবং ক্যানসার প্রতিরোধে কার্যকর।
2.আপেল: দাম বেশি হলেও সারা বছরের মধ্যে এই ফল পাওয়া যায়। এটি প্রোসায়ানিডিনস ধারণ করে, যা ক্যানসার প্রতিরোধে কার্যকর।
3.ডালিম বা বেদানা: ডালিমে ফলিফেনল নামে এক যৌগ থাকে, যা ক্যানসার সৃষ্টকারী কোষ ধ্বংস করতে সহায়ক।
4.আঙুর: আঙুরে রেসভেরাট্রল পাওয়া যায়, যা ক্যানসারের ঝুঁকি কমিয়ে সামগ্রিক ভাবে সুস্থ থাকতে সাহায্য করে।
5.কমলালেবু: এটি একটি অত্যন্ত প্রয়োজনীয় ক্যানসার ফাইটার। কমলালেবুর কোয়ায় থাকা ২-হাইড্রক্সিফ্ল্যাভনয়েড (২-এইচএফ) স্তন ও ফুসফুস ক্যানসার কোষ ধ্বংস করতে কার্যকর ভূমিকা পালন করে।
6.টমেটো:
টমেটোতে থাকা লাইকোপিন নামক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ক্যানসারের মহা শত্রু কে প্রতিরোধ করে। তাই প্রতিদিনের ডায়েটে টমেটো রাখতে ভুলবেন না।
7.ব্রকোলি: ব্রকোলি সবজিতে থাকা ইন্ডোল-৩ কারবিনোল নামক ফাইটোকেমিক্যালস এর ভাণ্ডার, যা ক্যানসার কোষ ধ্বংস করতে পারে।
8.বিট: বিটা সায়ানিন ধারণ করা বিটের ক্যানসার প্রতিরোধে কার্যকর ভূমিকা নিতে সাহায্য করে।
9.নটে শাক: অ্যামারান্থাস ভিরিডি নামের যৌগ ক্যানসার প্রতিরোধক এবং অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
10.ফুলকপি: ফুলকপি ও বাঁধাকপি জাতীয় খাবার খেতে ক্যানসারের ঝুঁকি কমায় এবং কিডনি ক্যানসারের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে।
11. বাদাম :
বাদামে অত্যন্ত পরিমাণে ক্যালোরি থাকে। যারা প্রতিদিন বাদাম খান, তাদের ক্যান্সারের ঝুঁকি কমে যায়। এটি কারণে যে বাদাম শ্বসনতন্ত্র ও স্নায়ুতন্ত্রকে প্রভাবিত করে, তা ক্যানসারের উপর প্রভাব বিস্তার করতে পারে। যেহেতু বিভিন্ন কারণে ক্যানসার হতে পারে, তাই বাদাম শুধু সামান্য কিছু কারণের ঝুঁকি কমাতে পারে।
খাবার প্রতিরোধ
এর
একটি
অন্যতম
গুরুত্বপূর্ণ
অংশ,
এর
পাশাপাশি
আপনাকে
আরো
কয়েকটি
জিনিস
মেনে
চলতে
হবে।
1. মেয়েদের ১৬ বছরের আগে বিবাহ না দেওয়া এবং জন্মনিয়ন্ত্রক পিল ৫ বছরের বেশি সময় ধরে সেবন না করা।
2. বহুগামিতা রোধ।
3. ধূমপান বন্ধ করা।
4. সেক্সুয়ালি ট্রান্সমিটেড ডিজিজ কিংবা অপরিচ্ছন্নতা দূর করার জন্য সব সময় সচেতন থাকতে হবে কারণ এভাবেও জরায়ু ক্যানসার হয়ে থাকে।
5. নিয়মিত ব্যায়াম:
নিয়মিত শারীরিক কার্যাবলী এবং ব্যায়াম যেমন হাঁটা, যোগাসন, ব্যায়াম সহায়ক হতে পারে জরায়ু ক্যান্সার প্রতিরোধে।
6. অ্যালকোহল পরিহার করুন:
অতিরিক্ত অ্যালকোহল মুখ, গলা, খাদ্যনালী, এবং স্বরযন্ত্রের ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ায়। তাই অ্যালকোহল পুরোপুরি পরিহার করা উচিত।
7. পর্যাপ্ত ঘুম: প্রতি রাতে প্রায় 7-8 ঘণ্টা ঘুম নিতে হবে।
8. জরুরী যত্ন: জরায়ু ক্যান্সারের চিকিৎসা এর প্রাথমিক পর্যায়ে সঠিক চিকিৎসা ও সম্ভাব্য লক্ষণের সাথে সচেতন থাকা গুরুত্বপূর্ণ।
9. স্ক্রিনিং টেস্ট: স্ক্রিনিং টেস্ট যেমন পাপ স্মিয়ার টেস্ট বা HPV টেস্ট করা যেতে পারে। এই টেস্টগুলি জরায়ু ক্যান্সারের প্রাথমিক চিকিৎসায় সহায়ক।
10. HPV ভ্যাকসিন:
HPV ভ্যাকসিন মেয়াদপূর্বক প্রাথমিক প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ। এটি জরায়ু ক্যান্সারের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ সাহায্যকারী হতে পারে। সাধারণত ১০ বছরের পর থেকে জরায়ু মুখের ক্যান্সার প্রতিরোধক ভ্যাক্সিন নেওয়া যায়। এই ভ্যাক্সিনের তিনটি ডোজ আছে, প্রথম ডোজের এক মাস পরে দ্বিতীয় টিকা এবং তারপরে পাঁচ মাস পরে তৃতীয় ডোজের টিকা নেওয়া হয়। ভ্যাক্সিন ক্যান্সারকে ১০০% ঠেকিয়ে রাখতে পারে না, তবে এটি জরায়ু ক্যান্সারের ঝুঁকি কমিয়ে তোলতে সাহায্য করে।
জরায়ু ক্যান্সারের আধুনিক চিকিৎসা
জরায়ু ক্যান্সারের চিকিৎসা নির্ভর করে তা কতটা প্রাথমিক বা উন্নত স্থিতিতে শনাক্ত হয়েছে এবং রোগের ধরণের উপর। নিম্নলিখিত চিকিৎসা পদক্ষেপ সাধারণত ব্যবহৃত হয়:
1. সার্জারি: প্রাথমিক ক্যান্সারের জন্য সার্জারি সাধারণত প্রথম চিকিৎসা পদক্ষেপ হয়। এই সার্জারি পদক্ষেপে জরায়ুমুখে বা সার্ভিক্সের আক্রমণটি নিস্কাশন, জরায়ুমুখের নিচে অংশের অংশগুলির সরবরাহ বন্ধ করা হয়ে থাকে।
2. রেডিয়েশন থেরাপি: রেডিওথেরাপি হলো একটি চিকিৎসা পদ্ধতি যেখানে উচ্চ-শক্তি এক্স-রে বিম ব্যবহার করে ক্যান্সার কোষকে নষ্ট করা হয়। এটি একটি যন্ত্রের মাধ্যমে শরীরের বাইরে থেকে বিতরণ করা যেতে পারে এবং যোনি বা যোনিতে স্থাপিত একটি ধাতব নল ব্যবহার করে শরীরের অভ্যন্তরেও বিতরণ করা যেতে পারে।
3. কেমোথেরাপি: কেমোথেরাপি হলো একটি চিকিৎসা পদ্ধতি যেখানে অতিরিক্ত শক্তিশালী ঔষধ ব্যবহার করে ক্যান্সার কোষকে নষ্ট করা হয়। এই চিকিৎসা পদ্ধতিতে কিছুক্ষণের জন্য কেমোথেরাপি দেওয়া হয় এবং তারপরে রোগীর শরীরকে পুনরুদ্ধারের জন্য সময় দেওয়া হয়।
4. টার্গেটেড থেরাপি: এই প্রক্রিয়াটি বিশেষভাবে সার্জারি বা অনুক্রমী চিকিৎসার সাথে পরিচিত হয়েছে, যা অবশ্যই মূল্যবান সার্জারি পদক্ষেপের সাথে সম্প্রসারিত হতে পারে।
5. প্যালিয়েটিভ চিকিৎসা:
এটি সাধারণত অত্যন্ত উন্নত ক্যান্সারের মরণকালে লাভজনক হয়। এটি রোগের লক্ষণ বিহীন করে এবং রোগীদের জীবনধারার গুণমান বৃদ্ধি করে।
এই চিকিৎসা পদক্ষেপগুলি কেবল জরায়ু ক্যান্সারের চিকিৎসার কিছু উদাহরণ, এবং রোগের অবস্থার সাথে নির্ভর করে এই চিকিৎসা পদক্ষেপ গ্র্রহন করা হয়।